২৩ হত্যাকাণ্ডের মিথ্যা দাবি নিয়ে ডক্টর ইউনূসের Facebook পোস্ট

সংবাদ সম্মেলনে সাম্প্রদায়িক সহিংসতা নিয়ে সরকারের প্রতিক্রিয়া


বাংলাদেশ হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিষ্টান ঐক্য পরিষদ এক সংবাদ সম্মেলনে দাবি করেছে, গণঅভ্যুত্থানের পর গত সাড়ে চার মাসে সাম্প্রদায়িক সহিংসতার ঘটনায় ২৩ জন নিহত হয়েছেন।

হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিষ্টান ঐক্য পরিষদর সংবাদ সম্মেলনে সাম্প্রদায়িক সহিংসতার দাবিটি মিথ্যা : সরকার



এই দাবিকে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার অত্যন্ত গুরুত্বের সঙ্গে নিয়ে উল্লিখিত ২৩টি হত্যাকাণ্ডের তালিকা সংগ্রহ করে এবং তা পুলিশের কাছে পাঠিয়ে প্রতিটি ঘটনার প্রকৃত কারণ ও গৃহীত আইনি ব্যবস্থা সম্পর্কে তথ্য চায়।

পুলিশ সদর দপ্তর থেকে পাওয়া প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে যে, ২৩টি ঘটনার মধ্যে ২২টির প্রাথমিক কারণ চিহ্নিত হয়েছে এবং প্রয়োজনীয় আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। তবে একটি ঘটনার বিস্তারিত তথ্য এখনো পাওয়া যায়নি।

পুলিশের তদন্ত অনুযায়ী, তালিকাভুক্ত ২২টি ঘটনার মধ্যে একটিও সাম্প্রদায়িক সহিংসতার সঙ্গে সরাসরি সম্পর্কিত নয়। বিশ্লেষণে দেখা যায়, সাতটি হত্যাকাণ্ড চুরি ও দস্যুতার কারণে, চারটি ব্যক্তিগত ও পারিবারিক বিরোধের ফলে, তিনটি সাধারণ অপরাধ (যেমন ধর্ষণ, অতিরিক্ত মদ্যপানজনিত মৃত্যু ও দ্বন্দ্বজনিত মারামারি) থেকে, দুটি দুর্ঘটনাজনিত, দুটি ব্যবসায়িক বিরোধের কারণে, একটি স্থানীয় সংঘর্ষ, একটি জমিজমা সংক্রান্ত বিরোধ, এবং একটি আত্মহত্যাজনিত ঘটনায় ঘটেছে। এছাড়া, একটি মৃত্যুর প্রকৃত কারণ এখনো নিশ্চিত হওয়া যায়নি, তবে সেটি সাম্প্রদায়িক সহিংসতা নয় বলে জানা গেছে।

তালিকাভুক্ত নিহতদের মধ্যে একজন গত জানুয়ারিতে আহত হয়ে চিকিৎসাধীন অবস্থায় গত ডিসেম্বর মাসে মারা যান।

প্রতিটি ঘটনার তদন্ত চলছে এবং যথাযথ আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। পুলিশ ইতোমধ্যে আত্মহত্যা ও পানিতে ডুবে মৃত্যুর দুটি ঘটনার চূড়ান্ত প্রতিবেদন দাখিল করেছে। বাকি ২১টি মামলায় ৪৭ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে, যাদের মধ্যে ১৭ জন আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন।

প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তীকালীন সরকার সব ধরনের সহিংসতার বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থান নিয়েছে। একই সঙ্গে, কোনো ঘটনার ভুল ব্যাখ্যা দিয়ে সাম্প্রদায়িক উত্তেজনা সৃষ্টি করার প্রচেষ্টাকে উদ্বেগজনক বলে বিবেচনা করছে।

সরকার মনে করে, বিভ্রান্তিমূলক প্রচারণা দেশের সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতিকে ক্ষতিগ্রস্ত করতে পারে। তাই, সকল পক্ষকে দায়িত্বশীল আচরণ করার আহ্বান জানানো হয়েছে।

অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ডঃ মুহাম্মদ ইউনুস লিখেছেন তার ভেরিফাইড ফেসবুক পেইজে 

“বাংলাদেশ হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিষ্টান ঐক্য পরিষদের সংবাদ সম্মেলনে সাম্প্রদায়িক সংহিসতায় বাংলাদেশ হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিষ্টান ঐক্য পরিষদ গত বৃহস্পতিবার এক সংবাদ সম্মেলনে দাবি করেছে গণঅভ্যুত্থানের পর গত সাড়ে চার মাসে দেশে সাম্প্রদায়িক সহিংসতার ঘটনায় ২৩ জন হত্যার শিকার হয়েছেন।

হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিষ্টান ঐক্য পরিষদর সংবাদ সম্মেলনে সাম্প্রদায়িক সহিংসতার দাবিটি মিথ্যা : সরকার



হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিষ্টান ঐক্য পরিষদের এই দাবিকে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার অত্যন্ত গুরুত্বের সঙ্গে নেয় এবং উল্লিখিত ২৩টি হত্যাকাণ্ডের তালিকা সংগ্রহ করে। ওই তালিকে প্রধান উপদেষ্টার দপ্তর থেকে পুলিশের কাছে পাঠিয়ে প্রতিটি ঘটনার প্রকৃত কারণ ও গৃহীত আইনি ব্যবস্থা সম্পর্কে জানতে চাওয়া হয়।

পুলিশ সদর দপ্তর থেকে প্রতিটি ঘটনা সম্পর্কে বিস্তারিত জানায়। উল্লিখিত ২৩টি ঘটনার ২২টির প্রাথমিক কারণ সম্পর্কে পুলিশ অবগত হয়েছে এবং যথাযথ আইনি ব্যবস্থা গৃহীত হয়েছে। তবে একটি ঘটনা সম্পর্কে বিস্তারিত কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি।

যে ২২টি ঘটনার বিস্তারিত ইতোমধ্যে জানা গেছে তার মধ্যে একটি ঘটনার সঙ্গেও সাম্প্রদায়িক সহিংসতার কোনো সম্পর্ক নেই। হত্যাকাণ্ডের মধ্যে সর্বোচ্চ সাতটির সঙ্গে চুরি ও দস্যুতার সম্পর্ক রয়েছে, চারটিতে ব্যক্তিগত ও পারিবারিক কলহের ঘটনা জড়িত, তিনটি ক্ষেত্রে জেনারেল ক্রাইম যেমন ধর্ষণ, অতিরিক্ত মদ পানে মৃত্যু এবং বিদ্রুপ মন্তব্য করা নিয়ে দুই পক্ষের মারামরি থেকে মৃত্যু, দুইটি দুর্ঘটনা জনিত মৃত্যু, দুইটি ব্যবসায়িক শত্রুতার জেরে মৃত্যু, একটিতে স্থানীয়দের সংঘাতে মৃত্যু, একটি জমিজমার বিরোধ সংক্রান্ত ঘটনায় মৃত্যু, একটি আত্মহত্যার ঘটনা এবং একটি মৃত্যুর প্রকৃত কারণ এখনো না জানা গেলেও এটা নিশ্চিত হওয়া গেছে যে সেখানে কোনো সাম্প্রদায়িক সংঘাতের বিষয় নেই।

এই তালিকায় এমন ব্যক্তিও রয়েছেন যিনি গত বছরের জানুয়ারি মাসে একটি ঘটনায় আহত হয়ে চিকিৎসাধীন অবস্থায় গত ডিসেম্বর মাসে হাসপাতালে মারা যান।

এই প্রত্যেকটি ঘটনাকে যথাযথ গুরুত্ব দিয়ে আইনি পদক্ষেপ ইতোমধ্যে গ্রহণ করা হয়েছে। এই ২৩ ঘটনার দুটোতে যেখানে আত্মহত্যা ও পানিতে ডুবে মৃত্যুর ঘটনা রয়েছে সেই দুটি পুলিশ ইতোমধ্যে তদন্ত শেষে চূড়ান্ত প্রতিবেদন দিয়েছে। অপর ২১টি তদন্তাধীন মামলায় ইতোমধ্যে ৪৭ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে এবং গ্রেপ্তারকৃতদের মধ্যে ১৭ জন নিজেদের দায় স্বীকার করে আদালতে ১৬৪ ধারয় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন।

প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তী সরকার কোনো ধরনের সংহিসতাকেই সমর্থন করে না। একই সঙ্গে এই ধরনের ঘটনাকে সাম্প্রদায়িক সহিংসতা বলে প্রচারকে উদ্বেগজনক বলে মনে করে অন্তর্বর্তী সরকার।

এই ধরনের বিভ্রান্তিমূলক প্রচরণা দেশের সার্বিক সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বিনষ্টের সূত্রপাত ঘটাতে পারে বিবেচনায় অন্তর্বর্তীকালীন সরকার সকল পক্ষকে আরো দায়িত্বশীল হওয়ার আহ্বান জানায়।”






একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

নবীনতর পূর্বতন