বাংলাদেশের রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে ইসলামি দলগুলোর ভূমিকা ও প্রভাব ক্রমশ গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠছে। শেখ হাসিনার সরকারের পতনের পর থেকে বিভিন্ন ইসলামি দল ও সংগঠন তাদের সাংগঠনিক কার্যক্রম জোরদার করেছে এবং পারস্পরিক ঐক্য গঠনের প্রচেষ্টা চালাচ্ছে।
ইসলামি দলগুলোর রাজনৈতিক তৎপরতা বৃদ্ধি:
শেখ হাসিনার পতনের পর থেকে ইসলামি দলগুলো, বিশেষ করে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ, খেলাফত মজলিস, জমিয়তে উলামায়ে ইসলামসহ অন্যান্য দলগুলো তাদের সাংগঠনিক কার্যক্রম পুনরায় সক্রিয় করেছে। তারা বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের সঙ্গে মতবিনিময় ও বৈঠকের মাধ্যমে নিজেদের অবস্থান সুদৃঢ় করার চেষ্টা করছে। বিশেষ করে জামায়াতে ইসলামী বিভিন্ন ইসলামি দলের সঙ্গে নির্বাচনী ঐক্য গড়ার প্রচেষ্টা চালাচ্ছে।
বিএনপি ও জামায়াতের তৎপরতা:
ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে বিএনপি ও জামায়াতে ইসলামী উভয়েই ডান-বাম ও ইসলামি দলগুলোকে কাছে টানতে তৎপরতা বৃদ্ধি করেছে। নির্বাচনে নিজেদের অবস্থান সুদৃঢ় করতে তারা বিভিন্ন দলের সঙ্গে আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছে। তবে নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পর জোট, মঞ্চ বা সমঝোতার বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।
ইসলামী দলগুলোর ঐক্য প্রচেষ্টা:
বর্তমানে জামায়াত ও ইসলামী আন্দোলনের বাইরে 'সমমনা ইসলামী দলসমূহ' নামে ছয়টি দলের একটি জোট রয়েছে। এই জোটের শরিক দলগুলো হলো জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম, বাংলাদেশ খেলাফত মজলিস (মামুনুল হক), মুসলিম লীগ (আবুল খায়ের), খেলাফত মজলিস (আহমদ আবদুল কাদের), বাংলাদেশ খেলাফত আন্দোলন ও ইসলামী ঐক্য আন্দোলন। তারা পারস্পরিক যোগাযোগ বৃদ্ধি করে বৃহত্তর ঐক্য গঠনের প্রচেষ্টা চালাচ্ছে।
রাজনৈতিক মেরুকরণ ও ভবিষ্যৎ সম্ভাবনা:
রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, আগামী নির্বাচনে দুটি মেরুকরণ দেখা যেতে পারে। একদিকে বিএনপির নেতৃত্বে মধ্যপন্থি রাজনৈতিক দলগুলো, অন্যদিকে ধর্মভিত্তিক ইসলামি দলগুলো। তবে মতাদর্শিক পার্থক্যের কারণে ইসলামি দলগুলোর মধ্যে ঐক্য গঠন চ্যালেঞ্জিং হতে পারে। তবে জাতীয় স্বার্থে তারা ঐক্যবদ্ধ হওয়ার চেষ্টা করছে।
সার্বিকভাবে, বাংলাদেশের রাজনৈতিক অঙ্গনে ইসলামি দলগুলোর তৎপরতা ও পারস্পরিক ঐক্য প্রচেষ্টা আগামী নির্বাচনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারে। তাদের এই উদ্যোগ দেশের রাজনৈতিক সমীকরণে নতুন মাত্রা যোগ করতে পারে।
Present Bangla